শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

শীত এলে আমাদের ত্বক ধীরে ধীরে মলিন হতে শুরু করে। যেন বাহিরের বিবর্ণ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্বক যেন প্রাণহীন হতে শুরু করে।



শীতের রুক্ষতার প্রথম ছাপ পড়ে আমাদের ত্বকের উপর। আর তাই আমাদের ত্বকের জন্য এ সময় বাড়তি যত্নের প্রয়োজন।

পেজ সূচিপত্রঃ শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

জলপাই তেল

সব ধরনের ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল খুবই উপকারী। শীত পুরোপুরি দেখে বছর আগে ত্বকের শুষ্কতা দেশ বোঝা যাচ্ছে। শীতকালীন সৌন্দর্য চর্চায় অনেকেই শুষ্কতাকে অলিভ অয়েল বা জলপাই তেলের উপর অনেকটাই নির্ভর করে।শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে জলপাই তেলের কোন তুলনা হয় না। প্রচলিত আছে সৌন্দর্য চর্চায় জলপাই তেলের ব্যবহার মানুষ নিয়মিত করত। প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার করতে পারেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাটি এসিড রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা

মধু

রূপচর্চার কাজে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে মধু।মধু সবসময় সহজ ভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে শীতকালে এর ব্যবহার প্রচুর পরিমাণ বেড়ে যা। অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে নিশ্চিন্ত হয়ে মধু ব্যবহার করা যায়। মধু ত্বকএর সূক্ষ্মতা দূর করে। যেকোনো সমস্যায় মধু ওষুধের মত কাজ করে।

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন মধু খুব কার্যকরী উপাদান। মধু ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করতে এবং লোমকূপে ময়লা পরিষ্কার করতে মধু খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অর্গানিক মধুতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের অবস্থা স্প্রিত ত্বক এবং বিভিন্ন ধরনের ডাক আর লালচে ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

নারকেল তেল

বিশেষ করে শীতকালে মুখ ও শরীরের ত্বকের পাশাপাশি গোড়ালি হাটু কনুই এর বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন।। না হলে এই জায়গাগুলো রুক্ষ ও সূক্ষ্ম হয়ে যাই। তাই এর যত্নে ব্যবহার করা উচিত নারিকেল তেল। এর জন্য ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর তেল আলতো করে ওই জায়গা গুলোতে লাগিয়ে নিতে হবে। রাতের বেলায় এই কাজগুলো করা সবচেশীতে বেশি ভালো।

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন এ ঐদিন গোসল করার আগে নারকেলের তেল সামান্য গরম করে হাতে পায়ে মালিশ করলে ত্বক কমল ও মসৃণ হয়। এমনকি সুক্ক মৌসুমে নারকেল তেলের সঙ্গে গ্লিসারিন সামান্য গোলাপ জল ও পছন্দ হতো এসেনশিয়াল তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে ত্বক আরো বেশি।

আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়া ৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা

পাকা কলা

ত্বক উজ্জ্বল ওসৃণ করতে পাকা কলার কোন তুলনা হয় না। দুধ কলা ও বেসন মিক্সড করে মুখে হাতে ও পায়ে লাগাতে পারেন।২০-৩০ মিনিট পরে ময়েশ্চরাইজার লাগান। এতি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বক হয়ে উঠবে নরম ও কমল।

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন এ একটি পাকা কলা,এক টেবিল মধু ও এক টেবিল চামচ লেবুর রস-সবগুলো উপাদান মিশিয়ে একটি সুন্দর প্যাক তৈরি করা যায়। এরপর প্র্যাকটি ভালো করে মুখে লাগান, 15 মিনিট পর প্র্যাকটিস শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন পাকা কলার কত উপকার।

কমলালেবু

শীতের আমেজ টের পেতে পেতে একটু দেরি হয়ে যায়। তবে ফলের বাজারের দিকে তাকালে হাতছানি দিয়ে ডাকতে শুরু করে শীতের হল গুলো। এসব ফল খাওয়ার পাশাপাশি রূপচর্চায় ব্যবহার করা যায়। কমলা যেমন মজাদার, তেমন স্বাস্থ্যকর, এবং শীতের দিনে ত্বকের যত্নে এর অনেক ব্যবহার রয়েছে।

কমলার খোসায় থাকে জীবাণু বিরোধী, প্রদাহ বিরোধ, ছত্রাক বিরোধী উপাদান। এগুলো ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে। একটি কমলার খোসা এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে নিন এরপর সেই পানি ঠান্ডা করে মুখ ধোয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।

কমলার খোসা সরাসরি ত্বকে লাগানো ঠিক না। এসিডের প্রভাবে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। ত্বকের জন্য তাজা কমলার খোসার সঙ্গে যে পরিমাণ কমলার খুশি নেবেন সেই পরিমাণ মসুর ডাল বেটে নিন। মিশ্রণটি নিয়মিত টকে লাগাবেন। এতে করে ত্বক আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

গোলাপজল ও গ্লিসারিন

বর্তমান যুগের থেকে , আগের যুগের মানুষ রূপচর্চা কিংবা অন্য কোন কাজের জন্য প্রকৃতির উপর নির্ভর ছিল। কিন্তু আজকাল মানুষ প্রকৃতির বস্তুর চেয়ে কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনই ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে, তবে এসব সামগ্রী ত্বকের যত্ন নিতে ত্বকের অনেক পরিমাণে ক্ষতি সাধন করে থাকে।

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন এ গোলাপজল ও গ্লিসারিন খুব ভালো কাজ করে। গোলাপজল ত্বকের যত্নে ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের যেকোনো ধরনের জ্বালা এবং লালচে ভাব কমাতে গোলাপজল ও গ্লিসারিন খুব ভালো কাজ করে।

হালকা গরম পানিতে গোসল

বর্তমানে শীত পড়লেই আমরা গোসল করতে ভয় পাই। আর নিয়মিত গোসল না করলে এমনিতে ত্বক খারাপ হতে শুরু করে। আমরা যদি নিয়মিত গোসল করে থাকি তাহলে আমাদের ত্বক এমনিতে ভালো থাকবে। যদি আমরা শীতের সময় হালকা গরম পানিতে গোসল করি তাহলে আমাদের ত্বক মসৃণ হবে।

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন রে জন্য আমরা সকালে হালকা গরম পানিতে গোসল করে নিতে পারি। শরীরে হালকা সরিষার তেল মেখে, হালকা গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক আরো মসৃণ এবং উজ্জ্বল হবে। তাই আমরা শীতের মধ্যে নিয়মিত হালকা গরম পানিতে গোসল করব।

মধু ও লেবুর রস

শীত মানেই ত্বকের বাড়তি ময়শ্চারাইজার দরকার পড়ে। অন্য ঋতুর তুলনায় শীতের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার পরিমান বেশি হইয়ে থাকে। ঘরে ভাবে ত্বকের জেল্লা বাড়াতে মধু ও লেবুর রসের গুরুত্ব অনেক।

এক চা চামচ মধুর সাথে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে বিশ মিনিট ধরে মুখে মেসেজ করতে হবে। তারপর নির্দেশে রেখে দিন দশ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন দেখুন উজ্জ্বল হবে। এক টেবিল চামচ টক দলের সাথে দুই চামচ মধু মিশিয়ে হাত পায়ে মালিশ করুন এতে শুষ্কতা ও ত্বক উজ্জ্বল হবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করা

আমরা গরমের সময় যে পরিমাণ পানি পান করি, সেই পরিমাণ সেই পরিমাণ শীতেও পান করতে হবে। শীতের সময়ও বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই পোপ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। শীত বলে একটু কোম পানি খেয়ে দিন কাটিয়ে দিবেন তা করা মোটেও ঠিক হবে না।


পানি কম খেলে শরীরের ভেতর ও বাহিরে তার খুদের প্রভাব অনেক আংশেই বেড়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করব শীত এর সময়েও অধিক পরিমাণে পানি পান করার

লেখকএর শেষ কথা

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন এ উপরের যেগুলো ব্যবহার করতে বলা হয়েছে এগুলো বাদে আরো অনেক কিছু ব্যবহার করা যায়। আমার মতে শীতের যত্নে মধু সবচাইতে বেশি কার্যকর।


আমরা সবাই চেষ্টা করব শীতের মধ্যে শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার। শীতের মধ্যে মানুষের অসুখ এর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এর জন্য আমাদের সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে। শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য উপরে যেগুলো ব্যবহার করতে বললাম সেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url